। হাবেলী ডিজিটাল ডেস্ক।
আগরতলা। ২৩ জুন।
১২০০ স্কুল কে বন্ধ করে দেয়া সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ছাত্র ছাত্রী সংখ্যা স্কুলগুলোতে পর্যাপ্ত নেই। ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদ পরিচালিত ৫৮৮ স্কুল ও রয়েছে। শিক্ষক সংকট কথা রাজ্য সরকার একবার ও বলছে না। স্কুল বন্ধ করে দেয়া সংবাদ রাজ্যে ছড়িয়ে পড়ার পর অভিভাবক মহলে ব্যাপক উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। এই বিষয়ে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন গুলো নীরব।
রাজ্য সরকার প্রথম ধাপে গত পাঁচ বছরে ৯৬১ টি এখন ১৬০ টি স্কুল একেবারে বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এই স্কুলগুলোতে ৩৩০৭ জন ছেলে মেয়ে পড়াশোনা করত। শিক্ষক ছিল ১০৯৯ জন। স্কুল বন্ধ হবার সাথে সাথে আগামী দিনে জন্য ১০৯৯ টি শিক্ষকদের পদ বন্ধ হয়ে যাবে। আগে বন্ধ হয়ে গেছে ৩১০৩ জন শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী ২৮৮ পদ বন্ধ হয়ে যায়। এই পদে আর কোন দিন বেকারদের চাকরীর সুযোগ নেই।
ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদ পরিচালিত ৫৮৮ স্কুল থেকে কিছু স্কুল কে পাশের অন্য স্কুলে সাথে মিশিয়ে দেওয়া হয়েছে।বন্ধ হওয়া স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের পাশের অন্য স্কুলে নিয়ে যাওয়া হবে। এক্ষেত্রে দেখা যাবে বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব ৫ কিমি হতে পারে। এই দূরত্বে স্কুলে একটি ৬ বছরের ছেলে মেয়ে একার পক্ষে যাওয়া সম্ভব নয়।গ্ৰামীন এলাকায় পরিবহন ব্যবস্থা ভালো নেই। কোথাও আবার পরিবহন ব্যবস্থা একবারে নেই। অধিকাংশ অভিভাবকদের আর্থিক অবস্থা ভালো নেই। ছেলে মেয়ে কে অন্যত্র রেখে পড়াশোনা করাবে। অভিভাবকদের অভিযোগ সরকার চাইছেন গরিব ঘরের ছেলে মেয়ে কে স্কুল থেকে তাড়িয়ে দিতে।
এখন জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সকলে গ্ৰহন করেছে।যার কারণে প্রতিটি পরিবারে একের বেশি ছেলে মেয়ে নেই। এক পরিবারের একটি ছেলে বা মেয়ে বিবাহ করে সাংসারিক জীবনে যেতে প্রায় ৩০ বছর লেগে যায়। এই দীর্ঘ ফাঁকে আর কোন ছেলে মেয়ে স্কুলে যাবার মত কেউ নেই।
অন্যদিকে একমাত্র ছেলে বা মেয়ে কে সরকারি স্কুলে এখন পড়াতে কেউ রাজি নয়।সরকারি স্কুলে পড়াশোনা হয় না বলে অভিযোগ।সকলেই এখন বেসরকারি স্কুলে ভর্তি করে দেন।যার কারণে সরকারি স্কুলে ছাত্র-ছাত্রীদের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে।যাদের আর্থিক অবস্থা একে বারে খারাপ সেই পরিবারের ছেলে মেয়ে সরকারি স্কুলে পড়তে যায়। জনজাতিপরিবারের মিশনারি পরিচালিত বেসরকারীয়স্কুলে ছুটে যায়। যদি ও রাজ্য সরকার অনেক ক্ষেত্রে বেসরকারি স্কুলে পড়ুয়া ছেলে মেয়ে কে সরকারি সুবিধা দেয়। অনুপজাতি ঘরের ছেলে মেয়ে কে সেই সুযোগ দেয়া হয় না বলে অভিযোগ।
এদিকে ২০১৯ সালে পর ১০৩১০ জন শিক্ষক শিক্ষিকা চাকরি চলে যাওয়াতে শিক্ষক সংকট চলছে। রাজ্যের অধিকাংশ স্কুল এক দুই জন শিক্ষক দিয়ে চালানো হয়। সাথে প্রতি বছর শিক্ষক গন চাকরি থে থেকে অবসর নেন। সেই শূন্য পদ পূরণ করার উদ্যোগ নেই সরকারের।যার কারণে সরকারি স্কুলে পড়াশোনা করাতে অভিভাবকগন এখন পাঠাতে রাজি নয়।
উল্লেখ্য ১৯৪৫ সালে শিক্ষাকে সকলের কাছে পৌছে দেয়ার দাবিতে জনশিক্ষা সমিতি পাহাড়ে মাটি গরম করেছিল। সেদিন তাদের আন্দোলনের মুখে পড়ে ৪০০ অধিক বেসরকারি স্কুলকে সরকারি করতে বাধ্য হয়।
১৯৭৮ সালে রাজ্যে বামফ্রন্ট সরকার গঠন হবার পর প্রতিটি পাড়ায় পাড়ায় স্কুল খোলা হয়। প্রতি এক কিলোমিটার দূরে দূরে স্থাপন করা হয় প্রাথমিক বিদ্যালয়।সাথে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়।
এখন রাজ্য সরকার সরকারি স্কুলকে বন্ধ করে দেয়ার সাথে সাথে ছেলেমেয়েদের বেসরকারি স্কুলে ঠেলে দিচ্ছে বলে অভিভাবক মহল মনে করেন।