রমজানে এই খাবারগুলো পাতে রাখুন

বছরভেদে রোজার সময় খানিকটা কমবেশি হয়। শীতকালে রোজা ছোট হয়, গরমকালে বড়। আমাদের দেশে তা মোটামুটি ১০ থেকে ১৪ ঘণ্টার মতো হয়। এই লম্বা সময় মুসলমানরা নিজেদের পানাহার থেকে বিরত রেখে রোজা পালন করেন। ভোরবেলা সাহ্‌রি খেয়ে রোজা শুরু করেন। আর সন্ধ্যায় ইফতারির মধ্য দিয়ে ভাঙেন। দিনের লম্বা সময় খাওয়া হয় না বলে রাতের খাওয়াগুলোয় দিতে হয় বিশেষ মনোযোগ। জেনে নিন শরীর ভালো রাখতে এ সময় কোন খাবারগুলো খাবেন।

খেজুর

খেজুর ছাড়া রোজা যেন পূর্ণতা পায় না। নবীজি (সা.) ইফতারে তিনটি করে খেজুর খেতেন। তবে কেবল সে জন্যই নয়, পুষ্টিগুণের কারণেই রমজান মাসে খেজুর খাওয়া জরুরি। কারণ, এতে রয়েছে প্রচুর প্রাকৃতিক চিনি ও ভিটামিন। আছে পটাশিয়াম, ম্যাগনেশিয়াম ও আয়রনের মতো খনিজ পদার্থ। সে জন্য বিশেষ করে মেজুল জাতের খেজুর রোজায় গ্লাইকোজেনের ঘাটতি পূরণ করে শরীরের শক্তি জোগায়।

চর্বিহীন প্রোটিন

যেকোনো সময়ে আপনার পাতে থাকতে হয় পর্যাপ্ত প্রোটিন। কারণ, এগুলো আপনার শরীরের টিস্যু গঠন ও রক্ষণাবেক্ষণ করে। ভালো রাখে মাংসপেশি। তবে রোজার মাসে এ ব্যাপারে দিতে হয় বিশেষ মনোযোগ। নইলে রোজার সময় ফুরোবার আগেই আপনার শরীরের শক্তি ফুরিয়ে যাবে। সে জন্য পাতে তুলুন চর্বিহীন প্রোটিন জাতীয় খাবার। যেমন মাছ, ছাঁকা দই, চামড়া ছাড়ানো মুরগির মাংস, কটেজ চিজ, মটরশুটি ইত্যাদি। এগুলো প্রোটিনের চাহিদা জোগানোর সঙ্গে সঙ্গে অতিরিক্ত খিদের অনুভূতিও নিয়ন্ত্রণ করবে।

আস্ত শস্যদানা

রমজানে সাধারণ চালের বদলে লাল চাল আর সাধারণ আটার বদলে খান গমের আটা। এগুলোর জটিল কার্বোহাইড্রেট ভাঙতে সময় নেয়। ফলে শরীর দীর্ঘ সময় ধরে তা কাজে লাগাতে তথা ভেঙে শক্তি উৎপন্ন করতে পারে। সাহ্‌রিতে লাল চালের ভাত বা গমের আটার রুটি, সঙ্গে চর্বিহীন প্রোটিন খেলে দীর্ঘক্ষণ তা আপনার শরীরকে কর্মক্ষম রাখবে। সহজে জাগবে না খিদের অনুভূতি। পাশাপাশি এগুলো ফাইবারেও সমৃদ্ধ। তাই হজম ও রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করে।

ফল ও সবজি

আমাদের ইফতারিতে ভাজাপোড়া জাতীয় খাবারের আধিক্যটা একটু বেশিই থাকে। সে অভ্যাস বদলে পাতে বেশি করে রাখুন ফলমূল ও সবজি। রাখুন গাজর, টমেটো, আপেল, কলা, আঙুর, পেয়ারা ইত্যাদি। কারণ, সারা দিন কিছু না খাওয়ায় আপনার শরীরে পুষ্টি উপাদানের বড় ঘাটতি তৈরি হয়। ফল-সবজি বেশি খেলে তার অনেকখানি ইফতারিতেই পুষিয়ে নেওয়া যায়। শরীর পায় ভিটামিন ও খনিজ। পাশাপাশি রাখুন পানিসমৃদ্ধ ফল ও সবজি। যেমন শসা, তরমুজ ইত্যাদি। শুকনা ফলের মধ্যে রাখতে পারেন বিভিন্ন ধরনের বাদাম।

ডাবের পানি

সারা দিন পানি পান করা হয় না বলে ইফতারে বিশেষ জোর দিতে হয় এ ব্যাপারে। পানি তো থাকেই, তবে তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে পানীয়। সাধারণত পরিবেশন করা হয় লেবুর শরবত, ফলের জুস বা বাজার থেকে কেনা বিভিন্ন পানীয়। খেতে মুখরোচক হলেও সাধারণত এগুলোয় উচ্চ মাত্রায় ক্যালরি ও কৃত্রিম চিনি থাকে। বদলে রাখতে পারেন ডাবের পানি। অন্য যেকোনো পানীয়ের মতোই এটা আপনার শরীরকে হাইড্রেটেড করবে। সেই সঙ্গে জোগাবে ইলেক্ট্রোলাইট ও পটাশিয়ামের মতো পুষ্টি উপাদান।

তথ্যসূত্র : খলিজ টাইমস

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *