জোটের মুখ্যমন্ত্রী জিতেন চৌধুরী না পবিত্র কর : গুঞ্জন

হাবেলী ডিজিটাল ডেস্ক।
২৩ ফেব্রুয়ারি। আগরতলা।

জিতেন চৌধুরী না পবিত্র কর বামফ্রন্ট কংগ্রেস জোটের কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন। এই নিয়ে সি পি আই এম মধ্যে চাপা গুঞ্জন চলছে বলে সংবাদ।
যদিও সাব্রুমে নির্বাচনী জনসভায় ভাষণ দান কালে কংগ্রেস থেকে ঘোষণা করা হয়েছে জোট ক্ষমতায় আসলে মুখ্যমন্ত্রী হবেন জিতেন চৌধুরী।
কিন্তু পরবর্তী সময়ে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে সি পি আই এম পলিটব্যুরোর সদস্য তথা রাজ্য বিধানসভা বিরোধী দল নেতা মানিক সরকার জানিয়েছেন, সি পি আই এম রাজ্য কমিটি স্থির করবেন কে মুখ্যমন্ত্রী হবেন। কংগ্রেসের কথাতে সি পি আই এম মুখ্যমন্ত্রী পদে জিতেন চৌধুরী কে দায়িত্ব দিতে পারেন না।
সি পি আই এম রাজ্য কমিটির এবং পলিটব্যুরোর একাংশ সদস্য জিতেন চৌধুরী কে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসতে দিতে রাজী হবেন না বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বর্তমান রাজ্য কমিটি সম্পাদক মন্ডলীতে বিরোধী দল নেতা মানিক সরকার লবী শক্তিশালী। সেই সভাতে যদি শ্রীচৌধুরীর পক্ষে প্রস্তাব না পাশ হয় । তাহলে কংগ্রেস চাইলে ও শ্রীচৌধুরী মুখ্যমন্ত্রী পদে বসতে পারবেন না।
অন্যদিকে রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য পবিত্র কর শ্রীসরকারের লবির।শ্রীকরের পক্ষে সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য গন সমর্থন জানাতে পারেন। এছাড়া সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য আর কোন সদস্য বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করছেন না। তাই অগ্ৰাধিকার পাবেন শ্রীকর।
অতিতের কাজকর্ম অনুযায়ী দলীয় সূত্র মাধ্যমে জানা গেছে ১৯৭৮ সাল থেকে জনজাতীদের মধ্যে থেকে কাউকে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসাতে একাংশ কখনো রাজী ছিলেন না।সেরকম দলের সম্পাদক মন্ডলীসহ গুরুত্বপূর্ণ পদে জনজাতিদের বসতে দিতে রাজী ছিলেন না বলে সংবাদ।
প্রশ্ন উঠতে পারে ১৯৯৩ সালে দশরথ দেবকে কি ভাবে মুখ্যমন্ত্রী পদে বসানো হয়েছে। কিন্তু সেই সময় সি পি আই এম রাজ্য সম্পাদক মন্ডলী কায়দা করে রাজনৈতিক পরার্মশদাতা হিসেবে খগেন দাসকে বসিয়ে দিয়েছিলেন। এর পেছনে রহস্য হল যে কোন ধরনের কাজ শ্রীদাসকে ডিঙ্গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী শ্রীদেব যেন করতে না পারেন। মুখ্যমন্ত্রী পদে শ্রীদেবকে দায়িত্ব দেয়ার কিছু দিন পর তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। মুখ্যমন্ত্রী পদে যতদিন ছিলেন। তিনি কোন ধরনের কাজ কর্ম করতে পারতেন না।সমস্ত কাজ শ্রীদাস করেছেন।
এছাড়া উপমুখ্যমন্ত্রী পদে বৈদ্যনাথ মজুমদার কে বসিয়ে দিয়েছিল রাজ্য সম্পাদক মন্ডলী সদস্য গন। কিন্তু রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পদে মানিক সরকার দীর্ঘদিন ছিলেন। সেই সময়ে জনজাতিদের মধ্যে থেকে কাউকে উপমুখ্যমন্ত্রী পদে বসাতে দেয়া হয় নি। যদিও দলের অন্দরে বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে কেউ আলোচনা করতে সাহস পায় নি। রাজ্য কমিটির সম্পাদক মন্ডলীতেএ বিষয়ে প্রস্তাব তোলার পেছনেও ভয় কাজ করেছে। যিনি এই প্রস্তাব তুলবেন তিনি নেক নজরে পড়বেন শ্রীসরকারের । সেই বিষয়ে দলের সকলে অবহিত ছিলেন বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। জনজাতিদের মধ্যে থেকে কাউকে মুখ্যমন্ত্রী বা উপমুখ্যমন্ত্রী পদে না বসানোর ফলে দীর্ঘদিন যাবৎ তাদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছিল।
জনজাতিদের চাপা ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটে ২০১৮ সালে।গনমুক্তি পরিষদ তথা সি পি আই এম থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেয় জনজাতি জনগন। সেই বিষয়ে রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীর অধিকাংশ সদস্য একমত হবার পর ও কেউ প্রকাশে মুখ খুলতে নারাজ ছিল। সম্পাদক খগেন দাস, বিজন ধর এবং গৌতম দাশ মৃত্যু হয়। তখন ও রাজ্য সম্পাদক মন্ডলীবিরাট অংশ সদস্য জনজাতিদের পক্ষ থেকে কাউকে সম্পাদক পদে বসাতে রাজী ছিলেন না। কিন্তু পরবর্তী সময়ে এই নিয়ে দলের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করতে থাকে। তখন রাজ্য কমিটির সম্পাদক মন্ডলীর সদস্যদের একাংশ সদস্যদের চাপে পড়ে জিতেন চৌধুরী কে সম্পাদক পদে দায়িত্ব অর্পণ করা হয়েছে।শ্রীচৌধুরীকে সম্পাদক পদে দায়িত্ব দেয়ার পর থেকে দলের শক্তি বাড়াতে থাকে। সংগঠন শক্তি বাড়াতে থাকায় শ্রীচৌধুরীর ঐকান্তিক চেষ্টায় কংগ্রেসের সঙ্গে নির্বাচনে আঁতাত গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছে বলে অনেকের অভিমত।
নির্বাচনে জোটের ভাল হলে পরে শ্রীচৌধুরীকে কোন ঠাসা করার চক্রান্ত চলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।শ্রীচৌধুরীকে আগামী লোকসভা নির্বাচনে পুনরায় প্রার্থী করার প্রলোভন দেয়া হবে। এই কথা বলে তাকে সরিয়ে রাখা হতে পারে। তিনি ও দলের সিদ্ধান্ত মেনে নিতে বাধ্য হবেন। নির্বাচনের আগে থেকে এখন পর্যন্ত শ্রীচৌধুরী রাজ্যব্যাপী চষে বেড়াচ্ছেন। দলীয় কর্মী সমর্থকদের আপদে বিপদে ঝাঁপিয়ে পড়তে পাশে দাঁড়িয়েছেন। সেই বিষয়টি দলের একাংশ সহজে মেনে নিতে পারছেন না বলে সংবাদ।
আগামী ২ রা মার্চ বিধানসভা নির্বাচনের ফল জোটের পক্ষে রায় যায়। সি পি আই এম মুখ্যমন্ত্রী পদে কাকে প্রজেক্ট করেন সেই দিকে এখন সকলের নজর ।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *