আসন্ন বিধানসভা নির্বাচন ঘিরে শাসক বিরোধী দলের সংর্ঘষে বিভিন্ন এলাকায় আতঙ্ক

হাবেলী প্রতিবেদন।৪ নভেম্বর। আগরতলা।

রাজ্যের সর্বত্র রাজনৈতিক দল গুলো র মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়ে গেছে। সংঘর্ষ চলতে থাকায় সাধারণ মানুষের মধ্যে চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। উত্তেজনা নিয়ন্ত্রনে রাখতে পুলিশকে বিশালগড় মহকুমাতে ১৪৪ ধারা জারি করতে হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় চাপা আতঙ্ক বিরাজ করছে। সংঘর্ষ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ এখন পর্যন্ত ৪ জন কংগ্ৰেস কর্মীকে আটক করেছে।১৭ জন কংগ্ৰেস কর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।এরা পলাতক। কংগ্রেসের জয়দ্বীপকে পুলিশ খোঁজে বেড়াচ্ছে।ওর গাড়ি পুলিশ জয়দ্বীপের বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে গেছে।

৩১ অক্টোবর প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী মৃত্যু দিবস। সেই দিনটি কংগ্ৰেস বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে পালন করার উদ্যোগ গ্ৰহন করেছিল। ৬নং আগরতলা বিধানসভা কেন্দ্রের বিভিন্ন এলাকায় কংগ্ৰেস কর্মীদের উদ্যোগে দরিদ্র নারায়ন সেবা , সহ বিভিন্ন কর্মসূচি মাধ্যমে দিনটি পালন করার স নেয়া হয়েছিল। কংগ্ৰেসের অভিযোগ ঐদিন বিকেল বেলা শাসকদল বি জে পি দুস্কৃতি বাইক বাহিনী কংগ্ৰেস অফিসের উপর হামলে পড়ে ভাঙ্গচুর চালিয়েছে।তাতে করে ইন্দ্রনগর এবং জি বি বাজার সহ বিভিন্ন এলাকার কংগ্ৰেস অফিস ভেঙ্গে চুরমার করে দিয়েছে। অফিসের ভেতরে থাকা সমস্ত চেয়ার টেবিল সহ আসবাবপত্র ভেঙ্গে ফেলে। হামলা কারি দের হাতে ইন্দিরা গান্ধী ছবি ও রেহাই পায় নি বলে কংগ্ৰেসের অভিযোগ।
বয়স্কসহ মহিলাদের উপর হামলা করেছে। এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে জি বি বাজার থেকে জয়গুরু সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করতে ছিল। দাবিছীল ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতার করতে হবে। পরবর্তীতে পুলিশের হস্তক্ষেপে বিষয়টি নিয়ন্ত্রনে আসে।
অন্যদিকে সুয্যমনিনগর বিধানসভা কেন্দ্রের কংগ্ৰেসকর্মীদের উদ্যোগে ইন্ধীরা গান্ধী মৃত্যু দিবসের দিনে দরিদ্র নারায়ন সেবার জন্য চাল ডাল আলু সব্জীসহ নানান সামগ্ৰী এনে একটি ঘরের মধ্যে জমা করে রেখে ছিল। কিন্তু ৩০অক্টোবর দিন রাতের অন্ধকারে চাল ডাল কাপড় চোপড় সহ সমস্ত সামগ্ৰী চৃরি করে নিয়ে যায়। ঘরের বাইরে ফেলে দিয়ে নষ্ট করেছে।বিশাল গড় , কাকড়াবন, উদয়পুর,খোয়াই , বিলোনীয়াতে কংগ্ৰেসের অফিসের উপর হামলে পড়ে ভাঙ্গচুর করেছে।

গত ২ নভেম্বর বিশাল গড় মহকুমার অন্তর্গত রাউৎখলাতে কংগ্ৰেস সাথে বি জে পি কর্মী সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ সংগঠিত হয়।
ঘটনার সূত্রপাত ৩ নভেম্বর রাউৎখলাতে কংগ্ৰেস দলের অফিস উদ্বোধন করার কর্মসূচি ছিল। সেই জন্য কংগ্রেসকর্মীগন এলাকায় প্ল্যাগ ফেষ্টুনে সাজিয়ে তোলার কাজ করতেছিল।এদিন কংগ্ৰেস দলের থেকে বিশাল সমাবেশে উদ্যোগ নেয়া হয়েছিল। দল বদল ও হবার কথা ছিলো। কিন্তু বি জে পি র বাইক বাহিনী এতে বাদ সেদে বসেছিল । এই নিয়ে উভয়ের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে।বি জে পি কর্মীদেরকে কংগ্ৰেসকর্মীদের প্রতিরোধে পড়তে হয়। সং ঘষে কংগ্ৰেসের দুইজন কর্মী গুরুতর ভাবে আহত হয়েছে। একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে জি বি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। দুই রাউন্ড গুলি ছোড়া হয়েছে।গুলির আঘাতে কেউ হতাহত হয়নি। ছোড়া হয় বোমা । পুলিশ ঘটনাস্থলে স্থলে তল্লাশি চালিয়ে পরদিন দুইটি তাজা বোমা উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে।
বি জে পি দুর্বৃত্তরা রাউৎখলা কংগ্ৰেস ভবনে অগ্নিসংযোগ করেছে।অগ্নি সংযোগ সংবাদ পেয়ে বিশালগড়ের দমকল বাহিনী ঘটনাস্থলে রাবার পথে দুর্বৃত্তরা গাড়ির এবং কর্মীদের উপর হামলা চালিয়েছে। ঘটনা স্থলে দমকলের গাড়ি দেরীতে পৌঁছে।ফলে কংগ্ৰেস ভবন পুড়ে সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে যায়।
ঘটনার সংবাদ পেয়ে কংগ্ৰেস নেতা আগরতলা বাড়ি থেকে জয়দ্বীপ রায় রাউৎখলা কর্মীদের পাশে ছুটে গেছেন।
এদিকে ঘটনার সংবাদ পাবার সাথে সাথে জেলা পুলিশ সুপার এবং স্থানীয় পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পোঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে চেষ্টা করেছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কে লাঠিচার্জ এবং টিয়ার গ্যাস শেল পাঠাতে হয়েছে। তারপর ও পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। নিয়োগ করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ বাহিনী।
এদিকে এঘটনার সংবাদ পেয়ে উপমুখমন্ত্রী যীষ্ণু দেবর্বমা এবং বি জে পি রাজ্য সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ সিপাহি জলা জেলা পুলিশ সুপার অফিসে ছুটে গেছেন। সেখানে পুলিশ সুপারের সাথে ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেবর্বমা নির্দেশ দেন।

পুলিশ বিশাল গড় রাউৎখলা ঘটনা সম্পর্কে নিজেদের উদ্যোগে মামলা নথিভুক্ত করেছে। ঘটনার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে ১৭ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যে ৪ জন কে গ্ৰেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছে।
এই ঘটনা সম্পর্কে বি জে পি মন্ডল সভাপতি সুশান্ত দেব বলেন কংগ্ৰেসের পরিকল্পিত সন্ত্রাস । কংগ্রেসের নাম ভাঙ্গিয়ে বিশালগড়কে উতপ্ত করার চেষ্টা করছে।
অপরদিকে আগামী ৬ নভেম্বর বিশাল গড়ে বি জে পির দলীয় কর্মসূচিতে যোগদান করতে কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক রাত্রিবাস করবেন। সেখানে তিনি কর্মী সমর্থকদের সাথে মত বিনিময় করবেন।

উল্লেখ্য,১৯৭৮ সালে বামফ্রন্ট সরকার ক্ষমতায় আসার পর গৌতম দত্ত এবং পরিমল সাহা কে হত্যা করা হয়েছিল।
এখন আবার বিশাল গড় রাজনৈতিক উত্তপ্ত হয়ে উঠছে। নির্বাচন যত ঘনিয়ে আসবে বিশালগড় আগামী দিনে আরও উতপ্ত হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
বিশাল গড়ের বিধায়ক ভানুলাল সাহা গতকাল কের ঘটনার জন্য বি জে পি দুর্বৃত্তের কাজ বলে জানান। এবং পুলিশের একাংশের শাসকদলের হয়ে কাজ করছে বলে অভিযোগ করেছেন। তিনি আরো বলেন রাজ্যের স্বরতান্ত্রীক বি জে পি সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করতে সকল বিরোধী দল গুলো কে সংগঠিত হয়ে প্রতিরোধ গড়ে তোলার আহ্বান জানান তিনি।

অন্যদিকে আজ বিলোনীয়া মহকুমাতে বামপন্থী নেতা তাপস দত্ত বাসভবনে রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। সেই রক্তদান শিবিরের উপর দুর্বৃত্তরা হামলা হুজুতি ভয়ভীতি প্রদর্শন করেছে। বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়াহয় ।ভাঙ্গচুর করা হয় বলে শ্রীদত্ত জানিয়েছেন।
অন্যদিকে আজ আমজাদ নগরসহ দুই টি জায়গার বি জে পি অফিসে ভাঙচুর করা হয়েছে। এই সব ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *