হাবেলী প্রতিবেদন।৯ অক্টোবর। আগরতলা।
মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল আজ আবার দলের কাজকর্ম নিয়ে হুঙ্কার দেওয়ায় রাজনীতিতে পূজার রেস না কাটতেই শোরগোল পড়ে গেছে।দল আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে দলের মধ্যে গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব মেটাতে না পারে । তাহলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে তার খেসারত দিতে হতে পারে বলে রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহলের ধারণা। শাসকদল ক্ষমতায় আসার পর থেকে প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব গোষ্ঠীর সাথে দ্বন্দ শুরু হয়।
সেই সময়ে মন্ত্রী সুদীপ রায়বর্মন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের কাজকর্ম নিয়ে প্রতিবাদ করতে থাকে। তখন রামপ্রসাদ পাল মন্ত্রী সভায় ছিলেন না। শুধু রামপ্রসাদ সহ পুরানোদের অনেক ই শ্রীরায়বর্মণ সাথে হাত মিলিয়ে ছিল।
কিন্তু পরবর্তীতে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেও সম্ভব হয় নি। সুদীপ রায়বর্মন এবং আশিষ কুমার সাহা, আশিষ দাস দল থেকে বের হয়ে যান।
বি জে পি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব রামপ্রসাদ পাল সহ বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী কে মন্ত্রী এবং বিভিন্ন কর্পোরেশনের চেয়ারম্যান পদে বসিয়ে বিষয়টি মেটানোর চেষ্টা করেছেন।
তা করেও কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ রাজ্য সংগঠন কে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে সক্ষম হয় নি।তখন বাধ্য হয়েই শেষ পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রী পদ থেকে বিপ্লব কুমার দেব কে সরিয়ে ডাক্তার মানিক সাহা কে মূখ্যমন্ত্রী পদে বসিয়ে দেয়া হয়। এই অবস্থায় দলের অন্ধরে কিছু দিন গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব চাপা পড়ে যায়।
কিন্তু শ্রীদেবকে রাজ্যসভার সদস্য পদে প্রার্থী করে দেয়ার পরক্ষনেই পুনরায় দ্বন্দ শুরু হয়।ক্ষোভে কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক রাজ্যে অবস্থান কালেই বি জে পি ত্যাগ করে তিপরা মথা দলে যোগদান করেন। একটি শাসকদলের চার পাঁচ জন বিধায়ক দলের কাজে বীতিশ্রদ্ধ হয়ে বিধায়ক পদে ইস্তফা দেওয়া রাজ্যে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।
রাজ্য বিধানসভা নির্বাচন কে সামনে রেখে ভারতীয় জনতা পার্টি নির্বাচন কমিটি গঠন করা হয়েছে।নির্বাচন কমিটি কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের অনুমতিতে গঠন করা হয়ে থাকে।
এই কমিটিতে যাদের রাখা হয়েছে রাজ্য সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য , কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী প্রতিমা ভৌমিক এবং উপমুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেবর্বমা ছাড়া বাকি সদস্যরা ২০১৮ সালের পরে এসেছে। আগামী নির্বাচনে এরা ঠিক করবেন বিধানসভা নির্বাচনে দল কাকে কোথায় প্রার্থী মনোনয়ন দিবে। রামপ্রসাদ পালকে বর্তমান নির্বাচন কমিটি মনে করেন আগামী তে প্রার্থী করবে না।সে ক্ষেত্রে রামপ্রসাদ পাল আগাম কিছুই জানতে পারবেন না।রাজ্য নির্বাচন কমিটিতে রামপ্রসাদ পালে বিরোধী গোষ্ঠীর সদস্য সংখ্যা বেশি।শ্রীপালের পক্ষে কমিটি তে চারজন সদস্য রয়েছেন।
সংবাদে প্রকাশ ২০১৮ সালের রাজ্য সভাপতি নির্বাচনের সময় এবং পরবর্তীতে ডাক্তার মানিক সাহা কে মুখ্যমন্ত্রী পদে মনোনীত করার সময় পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছিল। সেই কথা চিন্তা করে নির্বাচন কমিটি অগ্ৰসর হলে আগামী তে টিকেট নিয়ে সমস্যায় পড়তে পারেন।
মন্ত্রী রামপ্রসাদ পাল ১৯৯০ সাল থেকে বি জে পি তে ছিলেন। যখন দলের আগরতলা শহরে বসার মত জায়গা ছিল না। সেন্ট্রাল রোড়ে সমীর পালের ছাপাখানা নয় তো জগন্নাথ দীঘির পাড়ে যীষ্ণু দেবর্বমার বাজাজ শোরুমে এককোণে বসে রামপ্রসাদ পাল সহ অনেকে দীর্ঘদিন কাজ করেছে। পরবর্তীতে ডাক্তার এইচ এস রায়চৌধুরী এবং শান্তিবত চক্রবর্তীর বাড়িতে চা বাগানের অফিসে বি জে পি কাজকর্ম পরিচালনা করা হয়েছে।
সেসময় থেকে রামপ্রসাদ পাল কাজ করে আসা একজন প্রকৃত কর্মীর মূল্যায়ন কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ যেভাবে করে চলেছেন। তিনি বারবার কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের কাছে উনার কাজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরেছেন।আর বারংবার অপমানিত করে একপেশে করে দেয়া হচ্ছে।
নির্বাচনের আগে যদি রামপ্রসাদ পালের হুঙ্কারে বিক্ষুব্ধ গোষ্ঠী পুনরায় চাঙ্গা হয়ে ওঠে। এবং সুদীপ রায়বর্মন কে মদত জুগিয়ে যেতে থাকে।তাহলে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ ময়দানে নেমে পড়ে থাকে ও তাহলে দলকে ক্ষমতায় পুনরায় ফিরে আনা দুঃসাধ্য হয়ে যাবে। এখন ও সময় রয়েছে দেখা যাক গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে।