পুরানোদের বঞ্চিত করে নতুনের উপর ভর করে বি জে পি ফিরবে ৬০টে ৬০

হাবেলী প্রতিবেদন। ২৬ সেপ্টেম্বর। আগরতলা।

কেউ বলছে ৫৬ । আবার কেউ বলছে ৬০। শাসকদল বি জে পি পুনরায় রাজ্য বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হয়ে বিপুল আসনে ক্ষমতায় ফিরে আসবে। এই আত্মবিশ্বাস নিয়ে বি জে পি আগামী বিধানসভা নির্বাচনে ঝাঁপিয়ে পড়তে দলে কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। রাজ্যের জন্য নবনিযুক্ত পর্যবেক্ষকগন তিনদিনের রাজ্য সফরে আসছেন।সফর কালে রাজ্য নবনির্বাচিত সভাপতি রাজীব ভট্টাচার্য এবং নয়া মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা কে সাথে নিয়ে সাংগঠনিক বৈঠক করেছেন। এছাড়া জেলা, মন্ডল , বিভিন্ন শাখা সংগঠন, সেলের নেতৃবৃন্দের সাথে বৈঠক করেছেন।যুব মোর্চা, মহিলা মোর্চা, কিষাণ মোর্চা, এস সি মোর্চা, এস টি মোর্চা,ও বি সি মোর্চা রাজ্য নেতৃত্বদের সাথে পৃথকভাবে দফায় দফায় বৈঠক করেছেন।
সহযোগী দল আই পি এফ টি ‌নেতৃবৃন্দের সাথে ও পৃথকভাবে বৈঠকে মিলিত হন।
এস টি মোর্চা নেতৃবৃন্দ কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ কে দলের ভিত মজবুত হয়েছে বলে জানিয়েছেন। এখন প্রশ্ন আগামী বিধানসভা নির্বাচনে এস টি মোর্চা উপজাতি সংরক্ষিত আসন থেকে কয়টি আসনে জয়ী হবেন।২০টি আসনের মধ্যে কয়টি আসনে বি জে পি প্রার্থী জামানত ধরে রাখতে সক্ষম হবে।২০টি উপজাতি সংরক্ষিত আসনে আজকের দিনে তিপরা মথা দল যে অবস্থানে রয়েছে। সেই অবস্থায় থেকে যায়। তাহলে পাঁচ টি এস টি মোর্চা প্রার্থী জয়ী হয়ে আসা কষ্টকর হবে। অন্যদিকে আই পি এফ টি যে কয়টি আসনে বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করবে। সেই সব আসনের একটি ও আই পি এফ টি জয়লাভ করাতো দূর‌অস্থ। জামানত বাজেয়াপ্ত হবে। এদের ২০১৮ সালে পরে পাহাড়ে সংগঠন গড়ে তোলার উদ্যোগ নেয়া হয় নি। আগরতলা সর্বস্ব সাইনবোর্ড পার্টি তে রূপান্তর হয়েছে। এছাড়া দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের দ্ধন্দে দলের ভিত আরও বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। একদিকে এন সি দেবর্বমা অপর দিকে মেবার কুমার জমাতিয়া ফলে দলের নীচুতলায় এখন অনেক ক্ষেত্রে প্রাথমিক কমিটি পর্যন্ত নেই।এই আগামী বিধানসভা নির্বাচনে দল প্রার্থী দাঁড় করিয়ে দিবে। কিন্তু সব বুথ গ্ৰহন কেন্দ্রে পুলিং এজেন্ট দিতে পারবেনা বলে বিভিন্ন সূত্রে সংবাদ।
পাহাড়ে আগামী মাসে এ ডি সি পরিচালিত ভিলেজ কমিটি নির্বাচন। এই নির্বাচনে শাসক দল বি জে পি ৫৮৭ টি ভিলেজ কমিটি ৫০ শতাংশ দখল করতে সক্ষম হয়। তবেই বি জে পি বিধানসভা নির্বাচনে লড়াই করে ভালো ফলের আশা করতে পারেন।নয় মুখরোচক ভাষন আগরতলার ঠান্ডা ঘরে বসে দিয়ে পাহাড়ে জনজাতি জনগনের মধ্যে সংগঠন শক্তিশালী করতে পারবে না। ভিলেজ কমিটি নির্বাচনে বি জে পি পেচারতল, চড়িলাম কিছু অংশ, শান্তিবাজার কিছু অংশ ভাল ফল করতে পারবে না বলে রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহলের ধারণা।
অন্যদিকে বি জে পি সমতলে পুরপরিষদসহ বিভিন্ন নির্বাচনে যেভাবে বাইক বাহিনী মাসূল ম্যানদের মাধ্যমে নির্বাচন করেছে।তিপরা মথা দল ভিলেজ কমিটি নির্বাচনে বি জে পি দেখানো পথেই অগ্ৰসর হবে। বি জে পি বাইক বাহিনী তিপরা মথা দলের বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে টিকে থাকতে পারবে না।তিপরা মথা দলের একটিই লক্ষ ভিলেজ কমিটি গুলো এককভাবে যেকোন মূল্যে দখল করতেই হবে। ভিলেজ কমিটি গুলো দখলে রাখতে পারে। তাহলে বিধানসভা নির্বাচনে র আগে সব কয়টি জাতীয় রাজনৈতিক দলের কাছে তাদের গ্ৰহন যোগ্যতা বাড়বে।তিপরাল্যান্ড ইস্যুকে আরও জোরদার করা সম্ভব হবে। মহারাজা প্রদ্যুৎ কিশোর দেববর্মা একটাই লক্ষ্য তিপরাসাকে যেকোমূল্যে একতা রাখতেই হবে। এজন্য যা কিছু করনীয় তাই করে যেতে প্রস্তুত। এখন দেখতে হবে বি জে পি শাসকদল হয়ে তা মোকাবিলা করতে পারেন কিনা।

উপজাতি অধ্যুষিত এলাকার রাজনৈতিক পরিস্থিতি আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে অনেক পরিবর্তন হতে পারে বলে অভিজ্ঞ মহলের ধারণা।তিপরা মথা দলের মধ্যে চাপা গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব অব্যাহত রয়েছে। এখন পর্যন্ত এ ডি সি তে তিপরা মথা দল ক্ষমতায় আসার পর এখন পর্যন্ত শিক্ষা এবং স্বাস্থ্য দপ্তরে বেশ কিছু শূন্য পদে নিয়োগ করা হয়েছে।শুন্য পদে সরকার স্বীকৃত ১৯ টি উপজাতি সম্প্রদায়ভূক্ত বেকার গনকে চাকরিতে নিয়োগ করা হয় নি। একমাত্র দেববর্মা সম্প্রদায়ভূক্ত বেকার গনকে চাকরিতে নিয়োগ করা হয়েছে।এই নিয়ে অন্যান্য সম্প্রদায়ের জনগন মধ্যে তীব্র চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।বুবাগ্ৰা তানসা করে চলতে বারবার আহ্বান জানিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু দলের একাংশ বুবাগ্ৰা সামনে একরকম ভাবে চলেন।বুবাগ্ৰা সামনে থেকে সরে গিয়ে অন্য রকমভাবে চলেন। মথা ক্ষমতায় আসার পর রাজ্যের প্রতিটি এলাকায় দলের অন্ধরে ক্ষমতা ভোগ করা নিয়ে চাপা বিরোধ চলেছে। ক্ষোভ এবং বিরোধ মেটাতে প্রতিটি জোনাল এবং সাব জোন ঊন্নয়ন কমিটিগুলোতে চেয়ারম্যান ছাড়া ভাইস-চেয়ারম্যান,ত জয়েন্ট বা যুগ্ম চেয়ারম্যান পদ সৃষ্টি করতে হয়েছে। তাতে করে এ ডি সি তে খরচ বেড়েছে। তাতে করে এ ডি সি এলাকার কাজ কর্ম স্তব্দ হয়ে পড়ে। ভিলেজ কমিটি নির্বাচনে তিপরা মথা দলের প্রার্থী হতে হন্যে হয়ে পড়ে রয়েছে।অতি উৎসাহী আকাঙ্খিত ব্যাক্তি ভিলেজ কমিটি নির্বাচনে প্রার্থী হতে না পারে। তখন ই দলের মধ্যে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ক্ষুব্ধ একাংশ বি জে পিতে ভিড়বে। এবং যারা সি পি আই এম ছেড়ে মথায় নাম লিখেছিল।এরা পুনরায় সি পি আই এম এ ফিরে যাবে বলে সংবাদ।এ ডি সি তে ক্ষমতায় আসার পর প্রশাসনিক কাজে একাংশ কর্মীগণ ভীষণ ভাবে ক্ষুব্ধ।

রাজ্য বিজেপি সাংগঠনিক ভাবে জনজাতি নেতৃবৃন্দকে কাজে সঠিক ভাবে ব্যবহার করতে পারেন। তাহলে পাহাড়ের মথা দল অনেক টা সাংগঠনিক ভাবে কোন ঠাসা হয়ে পড়বে। জনজাতিদের সকল সম্প্রদায়ের কাছে মথার গ্ৰহন যোগত্যা নেই। চাকমা,কল ই , কাইপেঙ , জমাতিয়া, মলসুম এবং রিয়াং দের একাংশ বি জে পি কে ভোট দিবে। মুসলিমদের একাংশ ভোট মথাতে যাবে। সাথে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে আমরা বাঙ্গালী দলের ভোট আগের তুলনায় কিছু বিধানসভা কেন্দ্রে বাড়তে পারে। এই ভোট বৃদ্ধি নির্ভর করবে মথা দলের কাজকর্মের উপর।মথা দল শৃঙ্খলা বজায় রূপ পারে। তাহলে পাহাড়ে সি পি আই এম ভালো ফল ভিলেজ কমিটি নির্বাচনে করতে পারবেনা বলে রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহলের অভিমত।
পাহাড়ে এই মুহূর্তে কংগ্রেস, তৃণমূল কংগ্রেস অবস্থা খুবই শোচনীয়। ভিলেজ কমিটি নির্বাচনে আগে কংগ্রেস এবং তৃণমূল কংগ্রেস সব ভিলেজ কমিটি তে প্রার্থী দিতে সক্ষম হবে না বলে রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহলের অভিমত।
অন্যদিকে বি জে পি পাহাড়ে আইন শৃঙ্খলা কঠোর ভাবে পালন করতে পারেন তাহলে মথা দলের উৎশৃঙ্খলা অনেক টা নিয়ন্ত্রনে নিয়ে আসা সম্ভব হবে বলে অনেকের অভিমত। তাতে করে বি জে পি পক্ষে ভালো ফল হতে পারে।

এখন প্রশ্ন নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ভিলেজ কমিটি নির্বাচন রাজ্য সরকার করবে তো। বর্তমান সময়ে রিয়াং শরনার্থীদেরকে ভোটার তালিকায় নাম তোলা কে কেন্দ্র করে রিয়াং শরনার্থীদেরকে পক্ষ থেকে আদালতের শরণাপন্ন হয়।তখন আদালতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে সকল রিয়াং শরনার্থীদের নাম ভোটার তালিকায় নথীভূক্ত করতে হবে। রাজ্য নির্বাচন কমিশন ফাইনাল ভোটার তালিকা ৩০সেপ্টম্ভর প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। আদালতের নির্দেশে এখন ফাইনাল ভোটার তালিকা আগামী ১৫ অক্টোবর প্রকাশ করা হবে। তারপর আগামী নভেম্বরে প্রথম সপ্তাহে মধ্যে ভিলেজ কমিটি নির্বাচন সম্পন্ন করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।যদি নির্বাচন পিছিয়ে ডিসে্ম্ভরে চলে যায়। তাহলে রাজ্য সরকার বিধানসভা নির্বাচনে পায়দা তুলতে পারবে।
কিন্তু মথা দলের চেয়ারম্যান প্রদ্যুৎকিশোর মানিক্য দেবর্বমা তখন বি জে পি কে পাল্টা চাপে ফেলার সুযোগ পাবে।
এই দেখতে হবে ভিলেজ কমিটি নির্বাচন কবে হচ্ছে।এই নির্বাচনের দিন ঘোষণা থেকে রাজ্য রাজনীতি পট পরিবর্তন হতে থাকবে।
আরও আমরা যদি পেছনের দিকে লক্ষ্য করি দেখতে পাই রাজ্যে জনজাতি ভিত্তিক ডানপন্থী দলগুলো পাঁচ বছর এক জায়গায় থাকতে পারে নি।

বি জে পি জোট সাথী ক্ষমতার স্বাদ পাবার পর ও আই পি এফ টি দুই টুকরো হয়ে রয়েছে। সেই দিক দিয়ে নজর করলে আগাম বলা ও পারে আই পি এফ টি সাইনবোর্ড মুছে যাবে।আজ থেকে ২২বছর আগে এ ডি সি তে আই পি এফ টি জঙ্গল বাহিনীর মদতে ক্ষমতায় আসে। কিন্তু পাঁচ বছরে পাঁচ জন মুখ্যনির্বাহী সদস্য করতে হয়েছে।
এই বিষয়ে পর্যালোচনা করলে সহজেই অনুমেয় যে আগামী বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত তিপরা মথা দল কে ঐক্যবদ্ধ থাকতে পারবে ?
রবীন্দ্র দেবর্বমা এবং অনন্ত দের্বমাকে এ ডি সি তে কার্যনির্বাহী সদস্য করতে পারে নি। এখন আবার হংসকুমার ত্রিপুরা কে কার্যনির্বাহী সদস্য পদ দেয়ার প্রলোভনে ফেলে বি জে পি থেকে ভেঙ্গে নিতে সক্ষম হয় বুবাগ্ৰা । কিন্তু এখন ও কার্যনির্বাহী সদস্য পদ না পাওয়াতে তিনি নাকি প্রচন্ড ক্ষুব্ধ। ডিসেম্বরে মধ্যে রাজ্য রাজনীতি পট পরিবর্তন হবেই।

এক মাত্র সি পি আই এম নীতি আদর্শ সামনে রেখে গনমুক্তি পরিষদ কে ঐক্যবদ্ধ রাখতে সক্ষম হয়েছে।

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।