হাবেলী প্রতিবেদন।২৪ সেপ্টেম্বর। আগরতলা।
অকাল বর্ষণে চাষীদের বাড়ছে দুশ্চিন্তা।চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শীতকালীন সবজি চাষি এবং জুমিয়া পরিবার।
গত কয়েকদিন রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় কখনো মোষলধারে, কোথাও ঝড় বৃষ্টি, কোথাও বাতাস সহ জির জির হচ্ছে।এই সময়ে বৃষ্টি হবার কথা নয়।এই অকালে বৃষ্টি হতে থাকলে চাষীদের দুশ্চিন্তা আরো বাড়বে।
আগাম আমন ধান চাষ করে ছিল। সেই সব আমন ধানের গাছে কোথাও ফুল আসছে। কোথাও ধানের ফুল বেরিয়ে গেছে।আগাম ফুল যে সব ধান গাছের বেরিয়ে গেছে। বৃষ্টির জন্য ধানের ফুলে কীটনাশক ওষুধ ব্যবহার করা যাবে না। সময় মত ধানের ফুলে কীটনাশক ওষুধ ব্যবহার করতে না পারলে ধান চোচা হয়ে যাবে। নীচুতলার জমিতে বৃষ্টি জল দাঁড়িয়ে যাবে। তাতে করে ধান গাছ ডলে পড়ে ধানের ব্যাপক ক্ষতি হবে।আগাম ধান গাছে ফুল এসে গেছে। সেই সব ধান দেওয়ালী পূজার পর ঘরে তোলা যাবে। এখন গ্ৰাম পাহাড়ে পাখিদের খাবার মত কোন ফল ফুল নেই।যে কারণে ধানের জমিতে ঝাঁকে ঝাঁকে পায়রা, চড়ুই সহ অন্যান্য পাখি গিয়ে পড়বে।স্বল্প সময়ের মধ্যে ধান খেয়ে সাবাড় করে দিবে।
জমিতে এখন ইঁদুরের উৎপাত বেশি।ধান গাছের পেটে ফুল আসে তখন থেকে ধান গাছ ইঁদুর খেতে শুরু করে। এই সময়ে ধান গাছ কেটে নষ্ট করে তখন সেই গাছে ধান আসবে না। ইঁদুরে আক্রমনে বহু ধানের গাছে আক্রমণ করে নষ্ট করেছে। চাষী আর ধান ঘরে তুলতে পারে নি। ইঁদুরের হাত থেকে ধান গাছ রক্ষা করতে চাষীদের ভীষণ অসুবিধায় পড়তে হয়। কোন ধরনের ওষুধ ব্যবহার করে কিছু ফল পাওয়া যায় না বলে চাষী দের অভিযোগ।
অন্যদিকে যেসব ধান গাছের ফুল মাত্র বেরিয়েছে।ঝড় বৃষ্টি তে ধানের ফুলের রেনু ঝড়ে পড়ে যাবে। রেনু ঝড়ে পড়ে যায় ।তাহলে ধানে ভূষি বেশি হবে।ফলন কম হবে। চাষী প্রচন্ড ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এখন পাহাড়ে জনজাতিদের ঘরে জুম পাকা ধান ঘরে তোলার কাজ চলছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জুমের ধানসহ সব ফলন ঘরে তোলার কাজ শেষ হবে। অকাল বর্ষণে জুম ধান টিলা জমিতে জলে ভিজে গেছে। ভিজে যাওয়াতে জুমিয়া পরিবার গুলো কে বেশী সময় জমিতে থাকতে হবে।জলে ভিজে যাওয়াতে ধানসহ অন্যান্য সামগ্রী রোদে শুকিয়ে ঘরে তুলতে হবে। ভিজে যাওয়া ধানসহ অন্যান্য সামগ্রী ঘরে বেশি দিন রাখতে পারবে না।পচে নষ্ট হয়ে যাবে।
আগাম শীতকালীন সবজি চাষ করা হয়েছে। অকাল বর্ষণে সেই সব সব্জি জমিতে নষ্ট হবে। ধনিয়া গাছ পাতায় বালি লেগে যায় এবং জলে গাছ পচে যাবে। লাল শাক, ডাটা, ফুলকপি, পালং, টমোটো, মূলাসহ নানান শীত কালীন সবজি ব্যাপক ক্ষতি হবে।
অপরদিকে আগাম আলু চাষ করতে জমি তৈরি করে ছিল। সেই সব জমিতে বৃষ্টি জল জমে আছে। সেই সব জমির মাটি পুনরায় শুকাতে হবে। তারপর জমিতে চাষ দিয়ে তৈরি করতে হবে। এই করে আগাম আলু চাষ করা হবে না।আলু চাষ পিছিয়ে যাবে।যেসকল চাষী মৌষমে দুই বার আলু চাষ করেন। সেই সব চাষী পড়বেন বিপাকে।কারণ দুই বার আলু চাষ করতে না পারলে সে ক্ষতির মুখে পড়বেন।ব্যাঙ্ক ঋন নিয়ে যারা আলু চাষ করেন। ওরা ব্যাঙ্ক ঋন পরিশোধ করতে অসুবিধায় পড়তে পারেন।