হাবেলী প্রতিবেদন। ৩০ আগষ্ট। আগরতলা।
পাহাড় ছাড়া সমতল দিয়ে পুনরায় রাজ্যে ক্ষমতায় ফিরে আসা অসম্ভব।তা অনুধাবন করতে পেরেছেন ভারতীয় জনতা পার্টি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।তাই কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব তিপরা মথা দলের সুপ্রিমো প্রদ্যুৎ কিশোর মানিক্য দেবর্বমা কে জোটে আনতে মরিয়া চেষ্টা চালাচ্ছেন। এখন ও আশার আলো দেখা যাচ্ছেনা।যে কারণে গতকাল দলের জনসমাবেশে একটি শব্দও বি জে পি সর্ব ভারতীয় জনতা পার্টির সভাপতি জে পি নাড্ডা তিপরা মথা বিরুদ্ধে ব্যবহার করেন নি। এই নিয়ে আজ দিনভর জনজাতিদের আলোচনা হয়। শাসকদল বি জে পি বাধ্য হয়ে শেষ পর্যন্ত খুমুলুঙ এ জনজাতিদের নিয়ে সভা করতে বাধ্য হয়েছে। তাতেও জনজাতিদের মধ্যে কোন ধরনের দাগ কাটতে ব্যর্থ হয়েছে।
আরো আশ্চর্য বিষয় হল গত কালকের সমাবেশ থেকে ফিরে যাবার যাবার সময় দুস্কৃতিকারীদের সংঘবদ্ধ হামলায় বি জে পি কর্মী সমর্থক অনেকেই আহত হয়েছেন। কিন্তু শাসকদল বি জে পি এখন পর্যন্ত তিপরা মথা কে নিন্দা জানিয়ে কোনো ধরনের বিবৃতি পর্যন্ত দিতে দেখা যায় নি। বি জে পি রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ তাকে ক্ষেপিয়ে তুলতে রাজী নয়।
প্রদ্যুৎ কিশোর কোন ধরনের আপোষ করতে রাজি নয়। নির্বাচনের আগে বি জে পি র সাথে মথা আঁতাত গড়ে তোলে । তাহলে পাহাড়ের জনজাতিগন তাকে ছেড়ে চলে যাবে।মথার সাথে জড়িত বেশিরভাগ জনগন গনমুক্তি পরিষদ ও সি পি আই এমের সঙ্গ ত্যাগ করে আসারাই। ওরা কিছুতেই বি জে পি সাথে যেতে রাজী নয়।যদি মথা বি জে পি সাথে আঁতাত গড়ে তোলে তাহলে পাহাড় পুনরায় বামফ্রন্টের দখলে চলে যাবার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনা থেকে আগাম বলা যেতে পারে সমতলে কংগ্রেস পাহাড়ে বামফ্রন্ট দখল করবে। এই অবস্থায় মথা বেঁচে থাকতে আগামী বিধানসভা নির্বাচনে একক ভাবে লড়াই করতে বাধ্য। এছাড়া বিকল্প পথ খোলা নেই।
অন্যদিকে বি জে পি বিদায়ী সভাপতি তথা মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব বাবুর রাজনৈতিক অপরিপক্ক তার জন্য শাসকদল কে তাঁর খেসারত দিতে হচ্ছে। রাজ্যে দীর্ঘ বছর যাবৎ রাজাদের বিরুদ্ধে বামফ্রন্ট ছিল। বামফ্রন্ট জাতি উপজাতি সকলের কাছে মহারাজা বংশ ধরদের ক্ষেপিয়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিল।
তৎকালীন টি ইউ জে এস মহারাজাদের মতাদর্শের সাথে সামঞ্জস্য রেখে বামফ্রন্টের বিরুদ্ধে সংগঠন গড়ে তুলতে গিয়ে সফল হয় নি। তাই ২০১৮আগে আই এন টি ভেঙ্গে এন সি এবং মেবার নেতৃত্বে আই পি এফ টি
আত্মপ্রকাশ ঘটেছিল বামফ্রন্ট।
পাহাড়ে সে সময়ে আই পি এফ টিকে কাজে লাগিয়ে ডানপন্থী জনজাতি সংগঠন কে কোনঠাসা করে রেখেছিল।বিভিন্ন আইন বিরোধী কার্যকলাপ করার পর ও আই পি এফ টি সম্পর্কে বামফ্রন্ট সরকার নীরব ছিল। এদের সংগঠনকে শ্রীবৃদ্ধি করতে সরকার সব ধরনের সহযোগিতা করেছিল।
ঠিক বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভারতীয় জনতা পার্টি রাজ্যে ঝাঁপিয়ে পড়ে আই পি এফ টি কে কাছে টেনে নেওয়াতে বামফ্রন্ট সরকার বিধানসভা নির্বাচনে কোন ঠাসা হয়ে পড়ে। যদি আই পি এফ টি বামফ্রন্ট শিবিরে থেকে যেত।তাহলে বি জে পি রাজ্যের ক্ষমতায় বসার সুযোগ ছিল না।
সেই সময় আই পি এফ টি সুপ্রীমো আই এন টি কে কোন ঠাসা করতে বি জে পি কে ব্যবহার করে ছিল।
এখন পাল্টা চাপে ফেলে আই পি এফ টি কে পাহাড়ে সাইনবোর্ড সর্বস্ব করে ছেড়েছে।
এক ই চিন্তা ভাবনা নিয়ে বিপ্লবাবু দলের অন্যান্য দের সাথে শলাপরামর্শ না করে একক চিন্তায় মহারাজা কে মদত দিয়ে পাহাড়ে আই পি এফ টি এন সি দের কোন ঠাসা করতে যান।
আর আজ মহারাজা বিপ্লব বাবুর সহ বি জে পি দলের কথা শুনতে রাজি নয়। সেদিন যদি মহারাজা শাসক দলের মদত না পেলে আজ পাহাড়ে জনজাতি সংগঠন গড়ে তোলা অসম্ভব ছিল।
সেই সময় মহারাজাকে পেছন দিয়ে কংগ্রেস পূনাঙ্গ মদত জুগিয়ে ছিল পাহাড়ে পৃথক সংগঠন গড়ে তুলতে। তাই কংগ্রেস ছাড়া অন্য কোন দলের সাথে আঁতাত গড়ে তোলা খুব ই ক্ষিন।
গত কালকের পর মথা আরও শক্তি নিয়ে পাহাড়ে সংগঠন মজবুত করতে নেমেছে। গতকাল জনসমাবেশের জন্য সমগ্ৰ খুমুলুঙ এলাকায় অঘোষিত বনধ পালন করা হয়েছে। রাজ্যের ইতিহাসে এই ধরনের ঘটনা এই টায় প্রথম।মথা যে বি জে পি কথা মানতে কিছূতেই রাজী নয় তা আবার ও প্রমানিত।
ভিলেজ কমিটি নির্বাচনে ফল ভালো করার লক্ষে এখন থেকে কাজ শুরু করেছে। সমতলে বি জে পি যে ধরনের গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনে লড়েছে। এক ই নিয়ম পদ্ধতি অবলম্বন করে ভিলেজ কমিটি নির্বাচন লড়বে-মথা। যদিও ভিলেজ কমিটি নির্বাচন প্রক্রিয়া রাজ্য নির্বাচন কমিশনের কাছে।
গতকাল জনসমাবেশে যেসব জনজাতি অংশের জনগন অংশ গ্ৰহন করেছে। তাদের বাড়িতে গতকাল থেকে মথা বিস্তারিত তথ্য সংগ্রহ করছে । বি জে পি সমাবেশে অংশকারী জনজাতি পরিবারের লোকজন আতঙ্কে র মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। বিভিন্ন ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হচ্ছে বলে অভিযোগ।
রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহলের ধারণা মথা ২০০০সালে আই পি এফ টি পরোক্ষ মদৎ দাতাদের মাধ্যমে এ ডি সি দখল করেছিল। সেই পদ্ধতি বি জে পি সহ বিরোধী দলের প্রার্থী উপর চাপ সৃষ্টি করা হতে পারে বলে সংবাদ।তাই যদি হয় আগাম বলা যেতে পারে পাহাড়ের আসনে কোনো দল বিধায়ক পাবে না। ভিলেজ কমিটি নির্বাচনে র পর বিষয়টি আরও পরিষ্কার হবে।
সেই সময় বিপ্লব বাবু যদি রাজ্য কমিটির মতামতকে অগ্ৰায্য করে মহারাজা কে অবাধে সংগঠন গড়ে তুলতে দেওয়াতে আজ বি জে পিকে পাহাড়ে দুরবস্থ্যায় পড়তে হয়েছে।
বি জে পি নেতৃত্ব ব্যর্থ হ ওয়াতে প্রদ্যুতের মা বিমুখ কুমারির কাছে সংঘ পরিবার কর্তা ছুটে গেলেন। তাতেও আশানুরূপ ফল এখন ও পাওয়া যায় নি।
বি জে পি সর্বশেষে গোয়ালিয়রসহ বহি :রাজ্যের রাজপরিবারের সদস্যদের দিয়ে প্রদ্যু ৎ কিশোর কে মেনেজ করতে পারেন কিনা তাই এখন দেখার।