হাবেলী প্রতিবেদন। আগরতলা। ৩ আগষ্ট ।
শীঘ্রই পতন হচ্ছে তিপরা মথার। দল গোষ্ঠী কোন্দলে জর্জরিত। সার্কাসের মাষ্টার বারংবার রিং মধ্যে খেলোয়াড়দের রাখার চেষ্টা করেছেন। কিন্তু বারংবার অনেকেই টেক থেকে ছিটকে পড়ছে। এই অবস্থায় সার্কাসের মাষ্টার সঠিক ভাবে টেকে রেখে কতসময় চালাতে পারবেন। এই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন।
না রিং অচিরেই ভেঙ্গে খান খান হয়ে যায়। তাই এখন চর্চা বিষয়। মহারাজা ভাঙ্গন রোধ করতে পারবেন ? তাই নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ।
ত্রিপুরা উপজাতি এলাকা স্বশাসিত জেলা পরিষদের পরিচালনার দায়িত্ব এখন তিপরা মথা দলের হাতে। দলের চেয়ারম্যান প্রদ্যুৎ কিশোর মানিক্য দেবর্বমা। উনার কথাই শেষ কথা। তিনিই মুখ্যনির্বাহী সদস্য পদে পূর্ণ চন্দ্র জমাতিয়াকে বসিয়েছেন।
এই চেয়ার প্রতি দলের তথা ডেপুটি সি ই এম অনিমেষ দেবর্বমা এবং শিক্ষা দপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্ত সদস্য চিত্তরঞ্জন দেবর্বমা উভয়েই দাবিদার।সুপ্ত বাসনা নিয়ে খামটি মেরে মহারাজার প্রিয়পাত্র হয়ে চেয়ারটির প্রতি নজর রেখে চলেছে স্বাস্থ্য দপ্তর দায়িত্ব প্রাপ্ত সদ্স্য কমল কল ই।
গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব মিটিয়ে রাখতে বাধ্য হয়ে ডেপুটি সি ই এম পদে বসাতে হয় অনিমেষ দেবর্বমা কে। তারপর ও অনিমেষবাবু চুপ নেই।
গোষ্ঠী দ্বন্দ্বের কবলে পড়ে পূর্ণচন্দ্রবাবু এখন নাজেহাল। বিশেষ সূত্রে জানা গেছে পূর্ণ চন্দ্র কে এই পদে বসিয়ে মহারাজা ভূল করেছেন বলে মন্তব্য করেছেন। এখানে জগদীশ দেবর্বমা কে বসানো সঠিক ছিল বলে মন্তব্য করেছেন। এই মুহূর্তে পদে পরিবর্তন সম্ভব নয়। বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত পূর্ণ চন্দ্র জমাতিয়াকে রাখা হবে বলে সংবাদ।
শুধু কি তাই।পূর্ণচন্দ্রবাবু
স্বজাতি ভেবে সি ই ও পদে সি কে জমাতিয়াকে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে নিয়ে এ ডি সিতে বসিয়েছিলেন। এ ডি সি তে যোগ দিয়ে কিছুদিন সি ই ও পূর্ণচন্দ্রবাবুর নির্দেশ মত কাজ করেছেন। যখন সি ই ও বুঝতে পারেন উনাকে ছাড়া প্রশাসন চালানো সম্ভব নয়। তখন সি ই ও এ ডি সি র নিজস্ব অফিসারদের নিয়ে একটি গোষ্ঠী তৈরি করেন।বাম আমলের আখেড়ে গোছানো অফিসারগন রাতারাতি মথার সদস্য হয়ে পড়েন। এই অফিসারই এখন সি ই ও সহ অনিমেষ এবং চিত্তরঞ্জন দেবর্বমার সাথে হাত মিলিয়ে দুর্নীতিকে মদত দিচ্ছে বলে অভিযোগ।এক সময়ের সি ই এম পূর্ণচন্দ্র খাসলোক পশ্চিম জোনের চেয়ারম্যান অনিমেষ এবং চিত্তরঞ্জন সাথে হাত মিলিয়েছে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
সি ই ও র গোষ্ঠীকে মদত না জোগানোয় অবসরপ্রাপ্ত টি সি এস অফিসার সুবল বাবুকে এই মাসে চাকরি ছেড়ে দিয়ে আসতে বাধ্য হয়।প্রাপ্ত সূত্রে আরো জানা গেছে আরও এক জন অবসরপ্রাপ্ত টি সি এস অফিসার নোয়াতিয়া এবং জনৈক রিয়াং অফিসার কে সরিয়ে দেয়ার ফাঁদ পেতে রাখা হয়েছে।এ ডি সি র অবসরপ্রাপ্ত একাংশ অফিসার তিপরা মথা থেকে পূর্ন নিযুক্ত হাতিয়ে নেন। এখন ওরা চাচ্ছেন রাজ্য সরকারের অফিসারদের হটিয়ে নিজেদের হাতে ক্ষমতা তুলে নিতে। সেই লক্ষ্যেই সম্প্রদায়ের কথা বলে সুযোগ হাতিয়ে নিতে অনিমেষ এবং চিত্তরঞ্জন কে বিভিন্ন কাজে মদত দিচ্ছেন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে তিপরা মথা দল পূর্বতন আই এন পি টির নেতা জগদীশ এবং বিজয় বাবুকে প্রশাসনিক কাজকর্ম থেকে দূরে রাখা হয়। কোন কিছুই ওদের জানতে দেয়া হচ্ছে না। ভিলেজ কমিটি থেকে এম ডি সি এবং কার্যনির্বাহী সদস্যদের লক্ষ শুধু কামাই।
দলের হাই কমান্ড প্রদ্যুৎ কিশোর রাজ্যের বাইরে যান। তখনই দুর্নীতিবাজরা আখেড়ে গোছাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন।
উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের সময় মহারাজা প্রদ্যুৎ বাবু ও সি ই এম পূর্ণচন্দ্র ছিলেন দিল্লীতে। অন্যদিকে সি ই ও সি কে জমাতিয়া উত্তর প্রদেশের বিধানসভা নির্বাচনের অবজারভার হয়ে চলে গেছেন।
সেই সময় সি ই ও র দায়িত্বে ছিলেন সুবলবাবু। সেই সময় বামফ্রন্ট কর্মচারী সংগঠনের সকল কর্মচারী রাতারাতি জামা পাল্টে তিপরা মথা দলের কট্টর সমর্থক বনে যান। তখন সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে অধিকরাত পর্যন্ত সুবল বাবুকে উনার অফিস কক্ষে আটকে রেখে সকলে পদন্নোতি হাতিয়ে নেন। মুখ্যনির্বাহী সদস্য বেআইনি বিষয়টি জেনে ও কিছু করতে পারেন নি । মহারাজা বেআইনি কাজ জেনেও মুখ খুলতে পারেন নি।
গতকাল শিক্ষা দপ্তর থেকে ১০০ জনকে শিক্ষক পদের নিয়োগ পত্র দেওয়া হয়েছিল। পোষ্ট অফিসের মাধ্যমে নিয়োগ পত্র দেওয়া হয় নি। মোবাইলে ফোন করে বাড়ি থেকে ডেকে এনে অফার চাকরি প্রাপকদের হাতে তুলে দেওয়া হয়। এই নিয়োগ পত্র ছাড়া সংবাদ সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ার সাথে সাথে বেকারদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। ক্ষুব্ধ বেকার গন হামলে পড়ে মুখ্য নির্বাহী সদস্য সরকারি আবাস এবং অফিসে। ক্ষোভ প্রশমিত করতে এ ডি সি কতৃপক্ষ একশ জন শিক্ষকের নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল করার পথে হাঁটছেন বলে সংবাদ।যদি কতৃপক্ষ এই নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল না করে তাহলে তার প্রভাব সংগঠনে পড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
সংবাদ সূত্রে জানা গেছে এক মাত্র খুমুলুঙসহ পাশ্ববর্তী এলাকায় দশজন অফার পেয়েছে। একজন মহিলা শিক্ষিকা পদে অফার পেয়েছেন। উনার স্বামীই ইন্টারভিউ বোর্ডে ছিলেন। তিনি ওই স্কুলের শিক্ষক। এই নিয়ে আজ দিনভর চর্চা চলতে থাকে। পরিবারের আর্থিক অবস্থা খুবই ভালো।
অপর একজনকে শিক্ষক পদে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছে। তিনি জীবনে কখনো স্কুলে যান নি। ওপেন স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ করে সার্টিফিকেট হাতিয়ে নেন।
শিক্ষক পদে নিয়োগ করার জন্য যেসব যোগ্যতার কথা বলা হয়েছিল। বেকারদের অভিযোগ অফার প্রাপকদের মধ্যে এই সব যোগ্যতা নেই। ইন্টারভিউ নামে বেকারদের সাথে এ ডি সি কতৃপক্ষ হয়রানি ও রসিকতা করেছে বলে অভিযোগ করেন। অনেকেই বিষয়টি নিয়ে আদালতের দরজায় কড়া নাড়তে পারেন।
মহারাজা ঘোষণা করেছিলেন স্বচ্ছতার সাথে যোগ্যতা সম্পন্ন গরিব পরিবার, যাদের পরিবারে চাকরি নেই। সেই সকল পরিবারকে চাকরি দেয়া হবে। কোন এম ডি সি পরিবার এইসব চাকরি নিতে পারবেন না।
মহারাজাকে অন্ধকারে রেখে বেকারদের বঞ্চিত করে একাংশ অফিসার নিজের ছেলে মেয়ের চাকরি হাতিয়ে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ। এই সব নিয়ে বেকার দের মধ্যে তীব্র চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে। রাজনৈতিক অভিজ্ঞ মহলের ধারণা ভিলেজ কমিটি নির্বাচনেই ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বহি: প্রকাশ ঘটলে পাহাড়ে সি পি আই এম এবং বি জে পি জায়গা দখল করতে পারবে। ইতিমধ্যে বি জে পি তাদের জমি পেতে শুরু করেছে।