শাসকদলের মধ্যে বিস্ফোরক বিধায়ক নেই শৃঙ্খলা

হাবেলী প্রতিবেদন। আগরতলা।২৩ জুলাই ।

ভারতীয় জনতা পার্টির রাজ্য কমিটি এবং শাসকদলের মধ্যে নিয়ম বিধি , শৃঙ্খলা বলতে কিছুই নেই। বিশৃঙ্খলার কারণে যেকোন সময় সরকার ক্ষমতা চ্যুত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

শাসকদলের বর্ষিয়ান বিধায়ক অরুণ ভৌমিক শিক্ষা ও আইন মন্ত্রী রতনলাল নাথের বিরুদ্ধে সরাসরি দুর্নীতির সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ করেছেন।এক সাংবাদিক সম্মেলনে একথা বলেন তিনি।

অন্যদিকে দলের হুইপ অমান্য করে বিরোধী দলের রাষ্ট্রপতি পদ প্রার্থী কে ভোট প্রদান করেছেন। দলীয় হুইপ অমান্য এবং দলের ভেতরের কথা প্রকাশ্যে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ করার পর ও দল কোন পদক্ষেপ নেওয়ার সাহস দেখাতে পারে না।এই সময়ে বি জে পি কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য কমিটি ক্ষমতা নেই শৃঙ্খলা ভঙ্গ কারিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার।প্রায় ৪৮ ঘন্টা সময় অতিবাহিত হবার পর ও বি জে পি ঊর্দ্ধতন নেতৃত্ব চুপ। তাতে দলের প্রতি কার্যকর্তা এবং জনগণের বিশ্বাস নষ্ষ্ট হচ্ছে।নষ্ট হচ্ছে দলের ভাবমূর্তি।

বিলোনীয়া আসন থেকে বি জে পি প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে জয়ী হন অরুণ ভৌমিক। তিনি বিশিষ্ট আইনজীবী। দীর্ঘ দিন রাজনীতির সাথে জড়িত থাকার পর ও কখনও বিধায়ক হতে পারে নি।প্রথম এইবার তিনি নির্বাচনে জয়ী হন।

রাজ্য রাজনীতি তে পোড় খাওয়া রাজনীতি বিদ রতনলাল নাথ। তিনি ও আইন বিদ।১৯৮৮ সাল থেকে রাজনীতি র সাথে জড়িত তিনি। প্রথমবার বি জে পি বিধায়ক। রাজ্য মন্ত্রী সভার প্রভাবশালী শিক্ষা মন্ত্রী তিনি।

ডিগ্ৰী কলেজ অধ্যাপক বদলী করা নিয়ে অরুণ বাবুর সাথে রতন ঘটনার সূত্রপাত।

শ্রীভৌমিক দাবি করেন শিক্ষামন্ত্রী শ্রীনাথ সরাসরি দুর্নীতির সাথে জড়িত রয়েছেন বলে অভিযোগ করেন। তিনি সি বি আই তদন্তের দাবি জানিয়েছন।

রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে দল বিধায়কদের হুইপ দিতে পারে না। দলের নির্দেশ অমান্য করে ভোট দান করার পর ও এদের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব নয়। যে বিধায়কদ্ধয় শাসকদলের প্রার্থীর বিরুদ্ধে ভোট দিয়েছেন। ধারণা করা হয় এরা দীর্ঘদিন আগে থেকেই প্রকাশ্যেই সরকারের বিরুদ্ধে কাজকর্ম করে যাচ্ছে।দল বিরোধী কাজের জন্য সুদীপ রায়বর্মনের বিরুদ্ধে যখন দল ব্যবস্থা নিয়ে ছিল। তখন দুই বিধায়ক প্রকাশ্যে সুদীপের হয়ে কাজ করছেন বলে অভিযোগ।

এছাড়া মুখ্যমন্ত্রী মানিক সাহা কে কেন্দ্রীয় কমিটি রাজ্য কমিটির উপর চাপিয়ে দিয়েছিল।প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর সরকারি বাসভবনে বি জে পি বিধায়কদের জোর করে চাপ দিয়ে সর্মথন আদায় করা নিয়ে মিটিং এ বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হয়। তখন যে ঘটনা ঘটেছিলো কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দের সামনে। তখন দল বিধায়ক রামপ্রসাদ পাল এবং পরীমল দেবর্বমা বিরুদ্ধে কথা বলার সাহস পায়নি। কারণ জনগন তাদের সাথে রয়েছে। রামপ্রসাদ দীর্ঘদিনের পুরানো কর্মী।তাই বলে ওরা পার পেয়ে গেল কিভাবে ?

প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী সরকারি বাসভবনে উনার অনুমতি ছাড়া কেউ ঢুকতে পারে না। সেই দিন কার অনুমতি নিয়ে মিডিয়া প্রবেশ করেছিল।রাজ্য কমিটি আজ পর্যন্ত বিষয় গুলো কোনো পর্যালোচনা করেছে। ঘটনার সাথে জড়িত ব্যাক্তিকে শাস্তি দিয়েছে ?

দলের প্রাক্তন সভাপতি রনজয় কুমার দেব দীর্ঘদিন যাবৎ দল বিরোধী কাজকর্মের জন্য প্রকাশ্যে দলের কার্যকর্তা এবং কাজ কর্ম নিয়ে প্রকাশ্যে তীব্র সমালোচনা করছেন। এখন পর্যন্ত রাজ্য কমিটির নেতৃবৃন্দ টু শব্দটি করতে দেখা যায় নি।

রাজ্যে বি জে পি সরকার প্রতিষ্ঠা হবার পর থেকেই প্রকাশ্যেই দলের একাংশ কার্যকর্তা দলের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তুলে সমালোচনা করেন।তা করার সুযোগ করে দিয়েছে কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ। ক্ষমতার লোভে দল মূখে বলেন এক কথা।আর কাজের ক্ষেত্রে ভিন্ন রূপ। কেন্দ্রীয় কমিটির মদতে রাজ্য কমিটি নেতৃত্ব দলের গঠনতন্ত্র সংবিধান মোতাবেক অনেক কাজকর্ম করে নি বলে অভিযোগ।মন্ডল সভাপতি সহ বিভিন্ন পদাধিকারীদের যখন খুশি পরিবর্তন করা হয়। দলের গঠন তন্ত্র মোতাবেক সভাপতি পরিবর্তন করা হলে সহসভাপতি কাজ পরিচালনা করার নিয়ম।। কিন্তু তা করা হয়নি। অন্য একজনকে তুলে এনে সভাপতি বা শাখা সংগঠন মাথায় বসিয়ে দেয়া হয়েছে।

দল ক্ষমতায় থাকায় এখন কোন পর্যায়ের কোন কার্যকর্তা উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে দল বিরোধী কার্যকলাপ চালিয়ে যাবার পর ও চুপ। সকলেই এখন সংগঠন কে শক্তিশালী করার চেয়ে আখেড়ে গোছাতে বেশি আগ্ৰহী।

বর্তমান শাসক দলের মধ্যে প্রতিমা ভৌমিক, রামপ্রসাদ পাল, রামপদ জমাতিয়া,অতুল দেবর্ব মা আর এস এস লাইনে পুরানো বি জে পি।বাকিরা তো উড়ে এসে জুড়ে বসেছে।তার কারনে দল এখন কোন ভাবে সরকার বাঁচিয়ে রাখতে চান। যদিও এই সময়ে শাসকদল কোন সংকটে নেই।

রাজ্যে বামফ্রন্ট দীর্ঘদিন যাবৎ ক্ষমতায় ছিল। সেই সময় দলের একাংশ ক্যাডার নীচ থেকে উপর পর্যন্ত দল বিরোধী কার্যকলাপ চালিয়ে গেলেও দলের উর্দ্ধতন কর্মকর্তা নীরব ছিলেন। জনগন যখন দেখলেন দল দুর্নীতি এবং সামাজিক ব্যবিচারকারিদের প্রশ্রয় দিচ্ছে। সেই দিন নীরবে সাধারণ মানুষ বামফ্রন্ট কে ছুঁড়ে ফেলে দিতে একবার ও চিন্তা করে নি।বি জে পি ক্ষমতায় আসার স্বল্প সময়ের মধ্যে জনগন কেন সরকারের বিরুদ্ধে জনমত গড়ে উঠেছে। সেই সম্পর্কে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য নেতৃত্ব পর্যালোচনা করে দেখার মত এখন হাতে সময়ের বড় অভাব। সরকারি এবং বেসরকারি অর্থের আদ্যশ্রাদ্ধ করে রাজ্য, জেলা, মন্ডল এবং শাখা সংগঠন গুলোর কার্যকরি মিটিং করা হচ্ছে। দলের প্রতিটি কমিটিতে জমি দালাল,তোলাবাজকে জায়গা দেয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষ সব কিছু দেখছেন। কেউ কোনো প্রতিক্রিয়া জানাতে রাজি নয়।সময়ে জনগন প্রতিক্রিয়া জানাতে রায় দেন বলে বুথ কেন্দ্রে ছাপ্পা ভোটের অভিযোগ বিরোধী দলের পক্ষ থেকে তোলা হয়।

সমতলে এখন পর্যন্ত শাসকদলের কাজ কর্ম নিয়ে তীব্র সমালোচনা ঝড় উঠেছে। কিন্তু সরকার পরিবর্তন করার মত পরিস্থিতি এখন তৈরি করা সম্ভব হয় নি।

উল্লেখ্য ১৯৭৪ সালে রাজ্যসভার ভোটে ক্রস ভোট পড়েছিল। সেই ক্রস ভোটের কারণে কংগ্রেস সি পি আই এম প্রার্থী মধ্যে নির্দল প্রার্থী বীরচন্দ্র দেবর্বমা রাজ্যসভায় জয়ী হয়ে যায়। রাজ্যসভার ভোটে হুইপ থাকে। তারপর পর ও অনেকেই ক্রস ভোট দেন।

Leave a Comment

আপনার ই-মেইল এ্যাড্রেস প্রকাশিত হবে না।